আপনি যদি করদাতা হয়ে থাকেন তাহলে আইন অনুযায়ী প্রতি বছর আপনাকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে রিটার্ন দাখিল করতে হবে।
আপনি যদি পুরনো করদাতা হয়ে থাকেন তাহলে নিশ্চয়ই জানেন কোন সার্কেল-এ রিটার্ন জমা দিতে হবে। কিন্তু নতুন করদাতা হয়ে থাকেলে আপনি জেনে নিতে পারেন আপনার টিন সার্টিফিকেট থেকে।
একজন ব্যাক্তি করদাতা কিভাবে কর গণনা করে রিটার্ন তৈরি করবেন তার উপর আমাদের অনলাইন ট্যাক্স কোর্স রয়েছে। খুবই অল্প খরচে সেরা ভিডিও টিউটরিয়ালের সাথে পাচ্ছেন, কর গণানা এবং রিটার্ন ফরমের এক্সেল সফট কপি।
আপনি এখনই কোর্স ফি পরিশোধ করে আপনার পছন্দের ট্যাক্স কোর্স শুরু করতে পারবেন। কোন নির্দিষ্ট সময়ের জন্য অপেক্ষা করতে হবে না। এবং আপনি যেদিন কোর্স কিনবেন সেদিন থেকে টানা ১৫ দিন যতোবার খুশি ততোবার দেখার সুযোগ পাবেন!
১২ ডিজিটের টিন সার্টিফিকেট আবেদনের সময়ই আপনাকে ঠিকানা উল্লেখ করতে হয়। সেই ঠিকানা অনুযায়ী আপনার ট্যাক্স সার্কেল নির্ধারিত হয়। অর্থাৎ টিন সার্টিফিকেট-এ যে ট্যাক্স সার্কেল উল্লেখ থাকবে সেই সার্কেলেই আপনাকে রিটার্ন জমা দিতে হবে।
প্রত্যেক শ্রেণির করদাতার রিটার্ন দাখিলের জন্য ট্যাক্স সার্কেল ঠিক করা আছে। যেমন, ঢাকা সিভিল জেলায় অবস্থিত যে সকল বেসামরিক সরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারী ও পেনশনভুক্ত কর্মকর্তা/কর্মচারীর নাম A, B এবং C অক্ষরগুলো দিয়ে শুরু হয়েছে তাদেরকে ট্যাক্স জোন ৪, সার্কেল ৭১- এ রিটার্ন জমা দিতে হবে।
সহজ কথা হলো আপনার টিন সার্টিফিকেটে যে সার্কেল উল্লেখ থাকবে আপনি সেখানেই আপনার রিটার্ন দাখিল করবেন। তবে কিছু ক্ষেত্রে এর ব্যতিক্রম দেখা যায়। সে সব ক্ষেত্রে অন্য সার্কেলেও আপনি আপনার ট্যাক্স রিটার্ন জমা দিতে পারবেন।
কয়েক বছর ধরে ইলেক্ট্রনিক ভাবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ওয়েবসাইটে রিটার্ন দাখিল করা যাচ্ছে। এর ফলে আপনি যে সার্কেলেই থাকেন না কেন ওয়েবসাইট থেকে আপনার সার্কেল নির্বাচন করে খুব সহজেই আপনার রিটার্ন দাখিল করতে পারেন।
এখানে আপনার সার্কেল নিয়ে চিন্তা করতে হবে না যেহেতু আপনি আপনার কম্পিউটার থেকে রিটার্ন দাখিল করছেন।
আবার এখন প্রতি বছরই দেশের বিভিন্ন স্থানে আয়কর মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। মেলায় করদাতাগণ আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে পারেন। যারা মেলায় রিটার্ন দাখিল করেন তারা জানেন সার্কেল নাম্বার অনুযায়ী বুথ থাকে।
আপনার নির্ধারিত বুথে গিয়ে সহজেই আপনি রিটার্ন জমা দিতে পারেন। তাহলে এখানেও আপনাকে সার্কেল নিয়ে চিন্তা করতে হবে না।
যারা দেশে থাকেন তারা তাদের নির্ধারিত সার্কেল অনুযায়ী আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে পারেন। কিন্তু যেসব করদাতা রিটার্ন দাখিলের সময় বিদেশে অবস্থান করেন তারা তাদের নিকটস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে রিটার্ন দাখিল করতে পারবেন।
পরে বাংলাদেশী দূতাবাস রিটার্নগুলো জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কাছে পাঠিয়ে দেয়। তাহলে সেখানেও আপনাকে ট্যাক্স সার্কেল নিয়ে চিন্তা করতে হবে না। শুধু আপনার টিন সার্টিফিকেটে উল্লেখিত সার্কেল লিখে দিলেই হবে।
তবে সরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারীদের বেলায় এক্ষেত্রে কিছুটা ছাড় রয়েছে।
কোন সরকারি কর্মকর্তা প্রেষণে বা ছুটিতে বিদেশে উচ্চ শিক্ষারত বা প্রশিক্ষণরত থাকলে বা লিয়েনে বাংলাদেশের বাইরে কর্মরত থাকলে উক্ত প্রেষণ বা লিয়েন সমাপ্তিতে দেশে আসার তিন মাসের মধ্যে তার প্রেষণ বা লিয়েনকালীন সময়ের সকল রিটার্ন দখিল করবেন। এক্ষেত্রে নির্ধারিত সার্কেলেই রিটার্ন জমা দিতে হবে।
তবে কেউ যদি কোন কারনে সময়ের মধ্যে রিটার্ন জমা দিতে না পারেন এবং তার প্রতিনিধি হিসেবে অন্য কাউকে দিয়ে রিটার্ন জমা দিতে চান তাহলে সেটাও সম্ভব।
মেলা চলাকালীন আপনি যে কাউকে দিয়ে আপনার রিটার্ন জমা দিতে পারেন। এক্ষেত্রে কোন ফর্মালিটিস মানার দরকার নেই।
এছাড়া আপনি চাইলে লিগাল অ্যাডভাইজার বা ট্যাক্স কনসালট্যান্ট দিয়েও আপনার ট্যাক্স রিটার্ন জমা দিতে পারেন।
অনেক সময় দেখা যায় টিন সার্টিফিকেট নেয়ার সময় যে ঠিকানা ব্যবহার করেছিলেন তা পরিবর্তন হয়ে গেছে। এর ফলে ট্যাক্স সার্কেলও পরিবর্তন হয়েছে।
অনেকেই ঠিকানা পরিবর্তন হওয়ার পর ই-টিআইএন-এ থাকা ঠিকানাও পরিবর্তন করতে চান। নিচের ভিডিও থেকে জেনে নিতে পারেন কিভাবে ঠিকানা পরিবর্তন করবেন।
যেমন কেউ চাকুরীস্থল পরিবর্তন করতে পারেন বা আবার কেউ বাসা পরিবর্তন করতে পারেন।
সে ক্ষেত্রে নতুন সার্কেল এর অধীন-এ ট্যাক্স দিবেন না কি আগের সার্কেলেই রিটার্ন জমা দিবেন তা নিয়ে একটি প্রশ্ন থেকে যায়।
এক্ষেত্রে আপনি চাইলে আগের সার্কেলে রিটার্ন জমা দিতে পারেন।
আর যদি আপনি নতুন সার্কেলে আপনার রিটার্ন জমা দিতে চান সেক্ষেত্রে আগের সার্কেলে আপনি জানিয়ে দিবেন আপনি কোন সার্কেলে রিটার্ন জমা দিয়েছেন। তাহলেই আপনার দায়িত্ব শেষ হয়ে যাবে।
এর বাইরে যদি কেউ কোন কারনে সার্কেল পরিবর্তন করতে চান তাহলে ডিসিটি বরাবর আবেদন করে সার্কেল পরিবর্তন করতে পারেন।
- লেখাটি blog.bdtax.com.bd-তে ১৬ এপ্রিল ২০১৮ প্রকাশিত হয়।